অবশেষে
বাংলাদেশ ব্যাংক নয়, সরাসরি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকেই দেয়া হচ্ছে পুঁজিবাজারের জন্য
পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের ৯০০ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে অপ্রত্যাশিত খাত থেকে এই টাকা বরাদ্দ
দেয়া হচ্ছে। এ
বিষয়ে অর্থ বিভাগের দেয়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল
মুহিত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে
ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে
সহযোগিতার জন্য ১ হাজার ২৬৭ কোটি টাকার পুনঃর্থায়ন তহবিল গঠন করতে বাংলাদেশ
ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ৯০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের অনুমোদন দেয়। তবে
বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্জিত মুনাফার সরকারী অংশ থেকে এই টাকা কেটে রাখার প্রস্তাব
দেয়া হয়। কিন্তু
বর্তমানে সরকারের আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুনাফা থেকে টাকা
কেটে রাখার সুযোগ নেই বলে মনে করে মন্ত্রণালয়। এতে সরকারের আর্থিক
লেনদেন ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে বলে মত দেয় অর্থ বিভাগ। এই
অবস্থায় সরাসরি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পুনঃঅর্থায়নের টাকা যোগান দেয়ার সিদ্ধান্ত
নেয়া হয়। ঘোষিত
বাজেটে আলাদাভাবে এ খাতে অর্থ বরাদ্দের সুযোগ না থাকায় অপ্রত্যাশিত খাতে রক্ষিত
অর্থ থেকে তহবিল গঠন করা হবে। পরে সংশোধিত বাজেটে পুনঃঅর্থায়নের বিষয়টি স্পষ্ট করা হবে।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের দেয়া
প্রস্তাবে অনুমোদন করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মন্তব্য করেছেন, 'সরকার
প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বাজেটে বরাদ্দ রাখতে পারে এবং এ অর্থ দিয়ে
একটি ফান্ড (তহবিল) গঠন হতে পারে। এ ফান্ড পরিচালনার জন্য একটি নীতিমালা জারি করতে হবে, যাতে
ফান্ডটিকে অপারেশনাল (পরিচালনা) করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হবে। আগামী
২০১৩-২০১৪ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাওয়ায়, এ
বাজেটে আলাদাভাবে বরাদ্দ দেখানো সম্ভব হবে না। তবে, অপ্রত্যাশিত
খাত হতে এ ফান্ডে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে পরবর্তী সংশোধিত বাজেটে তা অন্তর্ভুক্ত করার
ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের প্রাপ্য ডিভিডেন্ডের (মুনাফা)
সঙ্গে প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য দেওয়া অর্থের কোনো যোগসূত্র থাকবে না।'
সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রীর
এ সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানিয়ে দিয়েছে অর্থ
বিভাগ। গত
মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. রাশেদুল আমীন স্বাক্ষরিত এ
সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সরকারের আর্থিক শৃঙ্খলা এবং মুদ্রানীতির স্বনিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে
পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণোদনা স্কিম ঘোষণা করা
হয়েছিল। এ
তহবিল গঠনের জন্য অর্থমন্ত্রী নতুন অর্থবছরেই অপ্রত্যাশিত খাত থেকে বরাদ্দ দেওয়ার
পক্ষে অনুমোদন দিয়েছেন। এখন অর্থবিভাগ থেকে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে ব্যাংক ও আর্থিক
প্রতিষ্ঠান এ তহবিল গঠন করবে।’
জানা গেছে, বাজেট
পাশের পর জুলাই মাসেই পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করা হবে। রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ সংস্থা
আইসিবি তহবিলটি পরিচালনা করবে। আইসিবি ৬ শতাংশ সুদে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসকে এই
তহিবল থেকে ঋণ দেবে। আর মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস এই অর্থ ১০ শতাংশ সরল
সুদে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের দেবে।
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন