দীর্ঘ
মন্দার পর স্থিতিশীলতার দিকে ফিরতে শুরু করেছে দেশের উভয় শেয়ারবাজার। তবে
সাম্প্রতিক স্থিতিশীলতা স্থায়ী হবে এমন প্রত্যাশার পাশাপাশি পতনের ভয়ও
বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তাগ্রস্থ করে রাখছে। কারণ গত দুই বছরে বাজারে কয়েকবার স্থিতিশীলতার
ইঙ্গিত দেখে একই প্রত্যাশা করেছিলেন বিনিয়োগকারীরা, কিন্তু তা স্থায়ী হয়নি। তবে
সাম্প্রতিক সময়ে নিস্ক্রিয় বিনিয়োগকারীদের সক্রিয়তার কারণেই বাজার স্বাভাবিকতার
পথে হাটছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। আর তাই এবারকার স্থিতিশীলতা স্থায়ী হবার সম্ভাবনা
তুলনামূলক বেশি বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য
মতে, গত ২৯ এপ্রিল ব্রড ইনডেক্স ছিল ৩ হাজার ৪৪৪ পয়েন্ট। বর্তমানে
তা ৪ হাজার ২১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ ৩৬ কার্যদিবসের মধ্যে সূচক ৭৬৯ পয়েন্ট বেড়েছে। আর
ডিএসইর দৈনিক লেনদেন সাড়ে ৮’শ কোটির ঘরে উঠেছে। এতে
বিনিয়োগকারীরা স্থিতিশীলতার প্রত্যাশ করছেন।
অপরদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি
থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত বাজারে প্রায় একই ধরনের উত্থান দেখা গিয়েছিল। গত
২৭ জানুয়ারি ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ছিল ৪ হাজার ৫৫ পয়েন্টে ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখে
এটি ৪ হাজার ২৮৬ পয়েন্টে অবস্থান নেয়।
এ সময়গুলোতেও বিনিয়োগকারীরা
বাজারের স্থিতিশীলতার প্রত্যাশা করেছিলেন। অনেকে ভেবেছিলেন সূচক ৫ হাজার অতিক্রম করবে। কিন্তু
প্রতিবারই সূচক পতনে রূপ নিয়েছে। পূরণ হয়নি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা। এ কারণেই সূচক আবার
উত্থানে ফিরতে শুরু করলেও কিছুটা সঙ্কিত থাকতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।
এদিকে সাম্প্রতিক বাজারের
উত্থান তুলনামূলক স্বাভাবিক বলেই মত দিচ্ছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। তাদের
পাশাপাশি বাজার সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, সংশোধন হয়ে সূচক বেড়ে
চলেছে। এ
কারণে এবারের স্থিতিশীলতার ইঙ্গিতকে স্থায়ী স্থিতিশীলতা রূপ পাবে বলেই মনে করছেন
তারা।
সার্বিক বাজারের সূচক অনেক
বাড়েনি। তবে
অনেক কোম্পানি থেকে বিনিয়োগকারীরা বের হতে পেরেছেন এবারের উত্থানে। কারণ
কিছু কোম্পানির শেয়ার অনেক উচ্চমূল্যে লেনদেন হয়েছে। আর এসব বিনিয়োগকারীরা
নতুন করে বিনিয়োগ করার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন। তাই বাজারে সক্রিয়
বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মার্চেন্ট
ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) সভাপতি মোহাম্মাদ এ হাফিজ বলেন, সাম্প্রতিক
বাজারের উত্থান তুলনামূলক স্বাভাবিক। কারণ সংশোধনের মাধ্যমে সূচক আস্তে আস্তে বাড়ছে। এর
আগে যতবার বাজারে উত্থান দেখা গেছে তখন টানা অনেক দিন ধরে আস্তে আস্তে বেড়েছে। তারপর
হঠাৎ করেই পড়তে শুরু করে। কিন্তু এবার সে ধরনের সম্ভাবনা নেই। কারণ বাজারে সূচকের
উর্ধমুখীতার পাশাপাশি সংশোধনও হচ্ছে। অপরদিকে লেনদেনের পরিমাণ অনেকটা সন্তোসজনক পর্যায়ে রয়েছে। মূলত
নিস্ক্রিয় বিনিয়োগকারীদের সক্রিয়তার কারণেই বাজারের এ স্বভাবকি আচরণ ফিরেছে। তাই
আশা করা যায় এবার বাজারের স্থিতিশীলতা স্থায়ী হবে।
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন