শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিডি ল্যাম্পস ধারাবাহিকভাবে আয় এবং লভ্যাংশ প্রদান করলেও সর্বশেষ ২০১২ অর্থবছরে উল্টো চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। কোম্পানির পরিচালনা ব্যয় অনেকাংশে বৃদ্ধি পাওয়ায় শেয়ারপ্রতি ৫.৩১ টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে বিনিয়োগকারীদের। বিক্রয় বৃদ্ধি পেলেও বিক্রয়কৃত পণ্যের প্রত্যক্ষ খরচ বেড়ে যাওয়ায় মুনাফার ঘরে তেমন কিছুই যোগ হয়নি। যে কারণে এ কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের হতাশা তৈরী হয়েছে। ২০১১ সালে এ কোম্পানির পরিচালনা ব্যয় ১০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা হলেও ২০১২ সালে হয়েছে ২৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। যেখানে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতনবাবদ ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা থেকে ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আর বিক্রয় ও বিতরণ বাবদ খরচ ৩ কোটি, রিপ্লেসমেন্ট কস্ট ৩ কোটি, বিক্রয় প্রোমশন ও পাবলিসিটি বাবদ ৫ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত: এসব খরচ মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কোম্পানিটি লোকসানের কবলে পড়েছে। বিক্রয় ২০১১ সালের তুলনায় ২০১২ সালে ২৭ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেলেও মুনাফায় তেমন কিছুই যোগ হয়নি। বরং কোম্পানির লোকসানই হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ২৭ কোটি টাকার বিক্রয় বৃদ্ধি পেলেও ওই বিক্রয়কৃত পণ্যের উপর প্রত্যক্ষ ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি টাকা। এছাড়া এই বর্ধিত বিক্রয়ের উপর আরো অনেক ব্যয় হয়েছে যা কোনো ফল বয়ে আনতে পারেনি বরং লোকসানের পরিমান বাড়িয়েছে। এদিকে কোম্পানি বড় লোকসানে পড়লেও কর্তৃপক্ষ লভ্যাংশের ক্ষেত্রে হতাশ করেনি বিনিয়োগকারীদের। কোম্পানিটি ২০১২ সালে ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে। যা অন্য অনেক কোম্পানির থেকে ভালো। কারণ, অনেক কোম্পানি বেশি মুনাফা করলেও বিনিয়োগকারীদের মুনাফা দিয়েছে কম। যে কারণে বিডি ল্যাম্পসের পরিচালনা পর্ষদকে বাহবা জানাতে ভুলেননি বিনিয়োগকারীরা।কোম্পানিটিতে ২০১১ সালে শেয়ারপ্রতি ৫.০৩ টাকা আয় হলেও ২০১২ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫.৩১ টাকা। যে কারণে কোম্পানির পরিচালকদের উপর বিরূপ মনোভাবও প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিনিয়োগকারীদের মতে, যেখানে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ৫ টাকা করে আয় করে সেখানে লোকসান করেছে ৫ টাকা করে। এটা কোম্পানির নেতৃত্বে থাকা কর্তাদের বোকামী ছাড়া আর কিছু না বলেই মনে করছে বিনিয়োগকারীরা।
তাদের মতে, কোম্পানির আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পরিচালনা ব্যয়ের পরিমান বাড়ানো দরকার ছিল। তাহলে এই অবস্থা হতো না। কোম্পানিটিতে শ্রমিক ফান্ডের ব্যবহারে আইনের ব্যত্যয় ঘটতে দেখা গেছে। আইন অনুযায়ী শ্রমিক ফান্ডের টাকার দুই-তৃতীয়াংশ বিতরণ ও বাকি একাংশ লাভজনক খাতে বিতরণের কথা উল্লেখ করা হলেও কর্তৃপক্ষ তা করে না। তারা সম্পূর্ণ বিতরণ করে দেয়। বিক্রয় বিবেচনায় সর্বশেষ অর্থবছরে ব্যবসায়িক সমৃদ্ধি হয়েছে বলে দাবি কোম্পানি কর্তৃপক্ষের। তাদের দাবি, পণ্য মূল্য বৃদ্ধি ও পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধির কারণে লোকসানের কবলে পড়তে হয়েছে। আর তারা শেয়ারহোল্ডারদের কথা ভেবে সাধারণ সঞ্চিতি থেকে লভ্যাংশ প্রদান করেছে বলে জানান। আর ২০১৩ অর্থবছরের ১ম প্রান্তিকে কোম্পানিটি আয়ের ধারায় ফিরেছে। ১ম প্রান্তিক শেষে ইপিএস হয়েছে ০.৫০ টাকা।
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন