লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে জেএমআই সিরিঞ্জ এবং সিভিও পেট্রোক্যামিকেলের শেয়ার দর। মাঝে মধ্যে সামান্য কারেকশন হলেও বিষয়টিকে আইওয়াশ হিসাবে দেখছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, কোনো একটি পক্ষ অধিক মুনাফার আশায় এ দুই কোম্পানির শেয়ার দর একটানা বাড়িয়ে নিচ্ছে। যে কোনো সময় তারা শেয়ারটি থেকে বেরিয়ে গেলে যারা উচ্চদরে শেয়ারটি ক্রয় করবেন তাদের পুঁজি আটকে যেতে পারে বলে আংশকা করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
গত ১৯ আগষ্ট জেমএমআই সিরিঞ্জের শেয়ার দর ৮০ টাকা থাকলেও মাত্র ৫ কার্যদিবসের মাথায় শেয়ারটির দর ১৩৯ টাকায় পৌঁছে। অর্থাৎ পাঁচ কার্যদিবসের ব্যবধানে এ শেয়ারের দর ৫৯ টাকা বৃদ্ধি পায়। এরপর এক কার্যদিবস সামান্য কারেকশন হতে না হতেই এ শেয়ারের দর আবার একটানা পাঁচ কার্যদিবস বাড়ে। গত ২৯ আগষ্ট থেকে এ শেয়ারের দর ১৩৪ টাকা থেকে একটানা ১৮০ টাকায় উঠে। অর্থাৎ পাঁচ কার্যদিবসে শেয়ারটির দর বৃদ্ধি পায় ৪৬ টাকা।
এরপর গত বৃহস্পতিবার এ শেয়ারের দর প্রায় ১১ টাকা কমলেও একদিনের ব্যবধানে আজ রোববার শেয়ারটির দর আবারও প্রায় ১৭.৬ টাকা বৃদ্ধি পায়। রোববার দিনশেষে এ শেয়ারের দর স্থির হয় ১৮৬.৬ টাকায়। বর্তমানে এ শেয়ারের পিই রেশিও ৯৫.২। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং মার্জিন অযোগ্য।
এদিকে তিন দিনের সামান্য কারেকশন হওয়ার পর গত ১২ আগষ্ট থেকে সিভিও পেট্রো ক্যামিকেলের শেয়ার দর ৪৬৩ টাকা থেকে ৬৩৪ টাকায় উঠে। এরপর একটানা তিন কার্যদিবস পুনরায় শেয়ারটির দরে কারেকশন হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর শেয়ারটি দর ৫৬৬ টাকায় নামলেও আবার একটানা চার কার্যদিবস ধরে বাড়ছে এ শেয়ারের দর। গত চার কার্যদিবসে এ শেয়ারের দর বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা। রোববার দিনশেষে শেয়ারটির দর স্থির হয় ৬৬৬.৫ টাকায়।
এদিকে বিনিয়োগকারীদের অনেকের মতে, সিভিও পেট্রো ক্যামিকেল জুন ক্লোজিং কোম্পানি। তাই খুব শিগগিরই কোম্পানিটি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে এমন প্রত্যাশা থেকে অনেকে শেয়ারটি বেশি দরে ক্রয় করছেন।
এ কোম্পানির ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯৯০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দেয়া হয়নি। এরপর ২০০৫ সালে কোম্পানিটি মাত্র ৬ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয় বিনিয়োগকারীদের। এরপর পুনরায় ৪ বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড দেয়নি। সর্বশেষ ২০১২ সালে কোম্পানিটি ২০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে। বর্তমানে এ শেয়ারের পিই রেশিও ৫৩১.৭৮। যা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ এবং শেয়ারটি বাজারের সঙ্গে ভারসাম্যহীন অবস্থায় রয়েছে।
এ কোম্পানির ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত রেকর্ড পর্যালোচনাপূর্বক বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের উল্লেখ করার মতো ডিভিডেন্ড দেয়নি। এ প্রেক্ষাপটে শেয়ার দর এতোটা বাড়াকে যৌক্তিক মনে করছেন না বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, জেএমআই সিরিঞ্জের ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত রেকর্ডেও উল্লেখ করা মতো তেমন কিছুই নেই। এর আগে এ কোম্পানির লেনদেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে হয়েছে। কোম্পানিটি ২০০০ সালের পর থেকে একটানা ৭ বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো প্রকার ডিভিডেন্ড দেয়নি। এরপর নামমাত্র ডিভিডেন্ড দিয়েছে কোম্পানিটি। সর্বশেষ গত ২০১২ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের মাত্র ১২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এছাড়া এ কোম্পানির আর্থিক বছর শেষ হবে ডিসেম্বরে। এ প্রেক্ষাপটেও শেয়ার দর এতোটা বৃদ্ধির পেছনে অশুভ পাঁয়তারা চলছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাই এ দুই শেয়ার লেনদেনের বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। - See more at: http://www.sharenews24.com/index.php?page=details&nc=07&news_id=28936#sthash.Pm4xzlR7.dpuf
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন