গ্রাহকের কাছ থেকে নানা কৌশলে বীমার টাকা নিয়ে লুটে খাচ্ছে দেশে ব্যবসারত একমাত্র বিদেশি জীবন বীমা কোম্পানি আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স (মেটলাইফ অ্যালিকো)। মাঠ পর্যায়ের উন্নয়ন কর্মকর্তাদের একাধিক চক্রের মাধ্যমে এ কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ফলে, ভুক্তভোগী সাধারণ গ্রাহক বারবার কোম্পানিতে ধর্ণা দিয়েও তাদের ন্যায্য পাওনা পাচ্ছে না। গ্রাহকরা টাকা চাইতে গেলে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। সম্প্রতি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে এ ধরনের একাধিক অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা ।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা আইডিআরএ’র কাছে বীমা দাবির টাকা পাওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করে নানা ভোগান্তির কথা তুলে ধরেছেন।
প্রতিষ্ঠানটির কাছে বীমা দাবির টাকা নিতে গিয়ে নানা ভোগান্তির শিকার হয়ে আইডিআরএ’র কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন দিনাজপুরের মাহবুব হোসেন রিপন। রিপন আইডিআরএ’র কাছে লেখা তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, তার চাচা মো. দেলোয়ার হোসেন ২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ১৭ লাখ ৯০ হাজার ৮০০ টাকার একটি পলিসি (পলিসি নম্বর-১৪৮৪৮৩৭) ক্রয় করেন।
২০১১ সালের ২২ জুলাই মো. দেলোয়ার হোসেন মারা যান। এরপর মো. মাহাবুব হোসেন রিপন (বীমা গ্রহীতার নমিনি) মেটলাইফ অ্যালিকোর কাছে বীমা দাবির টাকা দাবি করেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তাকে বীমা দাবির টাকা না দিয়ে দুই বছর ধরে তার সঙ্গে টালবাহানা করছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন রিপন।
এদিকে, আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে, বীমা দাবির টাকা নিয়ে রিপনের মতো একাধিক গ্রাহকের সঙ্গে গড়িমসি করছে বিদেশি এই বীমা প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে আইডিআরএ’র কাছে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে।
যোগযোগ করা হলে আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ মেটলাই অ্যালিকোর বিরুদ্ধে গ্রাহকের করা অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তা প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
মেটলাইফ অ্যালিকোর রিজোনাল সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান) নুরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। এ সময় তিনি বাংলানিউজের নাম শুনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। একপর্যায়ে তিনি নামাজে আছেন বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে রিপনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি কোম্পানির চাহিদা মোতাবেক নমিনি হিসেবে বীমার সব কাগজপত্র জমা দিয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি আমাকে বীমা দাবির টাকা দিচ্ছে না। বীমা দাবির টাকার জন্য আমি ২৫ থেকে ৩০ বার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে গেছি। ক্লেম বিভাগের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে বীমা দাবির টাকা না দিয়ে আসল টাকা নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন