দেশের প্রধান শেয়ারবাজার
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা গত এক বছরে বিভিন্ন
সংস্থার সঙ্গে অনেকটা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন বাজারে সুদিন ফিরিয়ে আনার লক্ষে। ওই
সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট রকিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বোর্ড বাজারে গতি ফিরিয়ে আনতে
নানাভাবে চেষ্টা করেছে। কিন্তু কাক্সিক্ষত সফলতা না আসলেও চেষ্টা করার কারণে অনেকের
কাছে বাহবা পেয়েছেন ডিএসই বোর্ড। অনেকে ডিএসই’র ব্যস্ততাকে লোক
দেখানো বলে মনে করেছিলেন। তবে সাবেক বোর্ডের অধীনে গৃহীত কয়েকটি পদক্ষেপ ডিএসইতে নতুন
মাত্রা যোগ করেছে। এছাড়া
গত একবছরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের ডিএসই পরিদর্শনের ঘটনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
গত এক বছরে রকিবুর রহমানের
নেতৃত্বে ডিএসই বোর্ডকে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি), জাতীয়
রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব
ব্যাংকস (বিএবি), মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ
ব্যাংক, আইডিআরএ, শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজসহ অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে
বিভিন্ন সময় বৈঠক করতে দেখা গেছে। যেখানে ডিএসই বোর্ড সংস্থাগুলোর সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও করেছে। স্টেক
হোল্ডারদের অনেকে বাজারের সুদিন ফিরিয়ে আনার জন্য বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করে
তুলেছিলেন। কিন্তু
কোনো আশ্বাসেরই বাস্তবায়ন দেখতে পাননি বিনিয়োগকারীরা। তারপরও রকিবুর রহমানের
নেতৃত্বাধীন বোর্ড যতদিন ক্ষমতায় ছিলেন ততদিন স্টেক হোল্ডারদের কাছ থেকে কিছু আদায়
করার চেষ্টা করেছেন।
২০১২ সালের ১৫ মার্চ ডিএসই’র সাধারণ মূল্য সূচক যখন ৪৫৪৩ পয়েন্ট তখন প্রেসিডেন্ট হিসাবে রকিবুর
রহমানের নেতৃত্বে নতুন পর্ষদ গঠিত হয়। আর এই পর্ষদ চলতি বছরের ১৫
জুন সূচক ৪২৯৯ তে রেখে দায়িত্ব শেষ করেন। তার দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই লেনদেন ও
সূচকে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়। যেখানে লেনদেন ৩শত কোটি থেকে হাজার কোটিতে উন্নীত
এবং সাড়ে ৪ হাজার পয়েন্ট থেকে সাড়ে ৫ হাজারে উঠে যায়। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী
হয়নি। তারপরও
এই পর্ষদের নেতৃত্বকালীন সময় আবারো লেনদেন হাজার কোটিতে উন্নীত হয়। তবে
তাও ছিল ক্ষণস্থায়ী।
রকিবুরের নেতৃত্বাধীন বোর্ডের
অধীনে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে। যেখানে ১০জুন ২০১২ তারিখে
অনলাইন ভিত্তিক লেনদেন চালুর জন্য এমএসএ প্লাস সফটওয়্যার সংযোজন, ২৮
জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে ডিএসইএক্স ও ডিএসই-৩০ নামে দুটি নতুন সূচক ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
তারিখে ডিএসইতে বাংলা ওয়েবাসাইট চালু করা হয়। বাজারকে উন্নত মানসম্পন্ন
করার জন্য উল্লিখিত পদক্ষেপ নিতে দেখা গেলেও তার ফল সম্পূর্ণ পাওয়া যায়নি।
কারণ, এমএসএ
প্লাস সফটওয়্যারের ক্রটি এখনো রয়েই গেছে। এছাড়া দীর্ঘ এক বছরে মাত্র ৩৫টি হাউজ অনলাইন লেনদেন
সুবিধার আওতায় এসেছে। আর নতুন সূচক নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে
বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
অন্যান্য বছরের তুলনায় গত
একবছরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতকে ডিএসই পরিদর্শনে আনা হয়েছে। কানাডা, ব্রিটিশ, ভারতীয়
ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা ডিএসই পরিদর্শন করেন। এছাড়া
বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদেরকেও দেখা গেছে ডিএসই পরিদর্শন করতে।
এদিকে পুঁজিবাজারের স্বার্থে
ডিএসই থেকে গঠিত কমিটি বিভিন্ন দেশের স্টক এক্সচেঞ্জ, নিয়ন্ত্রক
সংস্থা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে। এর মধ্যে সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ, ফিলিপাইন
স্টক এক্সচেঞ্জ, মালদ্বীপ স্টক এক্সচেঞ্জ, বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ, ন্যাশনাল
স্টক এক্সচেঞ্জ, লন্ডনের শেয়ারবাজার মেলায় অংশগ্রহণ করেন। বাজারের স্বার্থে রকিবুর
রহমানের বোর্ড বিদেশ ভ্রমন করলেও অনেকে বিষয়টিকে ভ্রমন বিলাস বলে মন্তব্য করেন।
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন