চৌকস এমডি খুঁজছে সঙ্কটাপন্ন আইসিবি ব্যাংক - তালিকায় আনোয়ারুল ইসলাম
শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০১৩
রুগ্ন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চৌকস ও যোগ্য প্রধান নির্বাহী খুজছে সমস্যা সংকুল আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটি ২০০৭ সালে পুনর্গঠিত হবার পর এ পর্যন্ত ৩ জন প্রধান নির্বাহী পেয়েছে, তবে বেরিয়ে আসতে পারেনি রুগ্ন ব্যাংকগুলোর কাতার থেকে।
বৃহস্পতিবারই কার্যত মেয়াদ শেষ হয়েছে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর। জানা গেছে, ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ এমন একজন প্রধান নির্বাহীকে দায়িত্ব দিতে চান যিনি তার মেধা দিয়ে ব্যাংকটিকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিতে পারবেন।
আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের নির্ভরযোগ্য সূত্র এমনটিই জানিয়েছে। ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী নিয়োগের এক প্রস্তাবেও এ কথা উল্লেখ করেছে পরিচালনা পর্ষদ। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই নতুন কোন প্রধান নির্বাহীকে দায়িত্ব দিতে চায় পর্ষদ।
সূত্র জানায়, প্রধান নির্বাহী পদে নিয়োগ দিতে বেশ কয়েকজনের তালিকা প্রণয়ন করে পরিচালনা পর্ষদ। সেখান থেকে চূড়ান্তভাবে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. আনোয়ারুল ইসলামকে নিয়োগ দিতে আগ্রহী। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে (বিআরপিডি) দায়িত্ব পালন করছেন।
ব্যাংকের পর্ষদের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে লেখা একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নিবার্হীর চুক্তির মেয়াদ ১৪ জুন শেষ হয়ে যাবে। আমরা তার চুক্তির মেয়াদ আর বাড়াতে চাইনা। সেখানে আমরা মো. আনোয়ারুল ইসলামকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দিতে আগ্রহী। ব্যাংকিং পেশায় তার পেশাগত অভিজ্ঞতায় আমরা সন্তুষ্ট। এবং বিশ্বাস করি, তার পেশাগত দূরদর্শিতা দিয়ে ব্যাংকটিকে সমস্যা থেকে বের করে নিয়ে আসতে পারবেন।’
জানা গেছে, ২০০৭ সালের পর থেকে একজন মালয়েশীয় নাগরিক সহ ৩ জন পর্যায়ক্রমে ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে ব্যাংকটির এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মামুন মাহমুদ শাহ।
সূত্র জানায়, আনোয়ারুল ইসলামকে দুই বছরের জন্য ব্যাংকের এমডি করতে চায় আইসিবি ব্যাংকের কর্তৃপক্ষ। তবে এ ব্যাপারে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এক সময়ের ওরিয়েন্টাল ব্যাংক বর্তমানে আইসিবি গ্রুপের মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে। ব্যাংকটিতে বর্তমানে পাঁচ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে। পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন ড. হাদনান বিন আবদুল জলিল।
এদিকে, সমস্যা সংকুল আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের কাছে আগের ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের আমানতকারীরা ১ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা পাবেন। এর মধ্যে সাধারণ আমানতকারীদের কাছে ব্যাংকের দেনা ১৮২ কোটি ৬০ লাখ টাকা, সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানের আমানত ৩২৬ কোটি টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ২২২ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দেনা ৪৪৫ কোটি টাকা এবং কলমানি মার্কেটে ব্যাংকটির দেনা ৬০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, বড় অংকের এই দায় পরিশোধের ক্ষমতা বর্তমানে ব্যাংকটির নেই।
সূত্র জানিয়েছে, ২০০৭ সালের ২ আগস্ট তৎকালীন দ্য ওরিয়েন্টাল ব্যাংক লিমিটেড পুনর্গঠন করে ১৯৯১ সালের ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন, ৭৭(৪)’ ধারায় পুনর্গঠন স্কিম করা হয়। স্কিমটি ২০০৮ সালের ৫ মে শুরু হয়। গত ৪ মে এর মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, নতুন স্কিমে এর পরিশোধিত মূলধন ধরা হয় ৭শ’ কোটি টাকা। এবং এর ৫২ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক মালয়েশীয় মালিকানার আইসিবি ফাইন্যান্স গ্রুপ হোল্ডিং এর কাছে বিক্রি করা হয়। ব্যাংকটিকে পুর্নগঠন করে নামকরণ করা হয় আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটি পরিচালনার দায়িত্ব নেয় তারা।
জানা গেছে, আনোয়ারুল ইসলাম ১৯৯৩ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তার পেশাজীবন শুরু করেন। সে হিসেবে তার ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা ২০ বছরে। বিধি মোতাবেক ব্যাংকের কোন ব্যাংকের এমডি হতে চাইলে ন্যূনতম ১৫ বছরের পেশাজীবন থাকতে হবে এ খাতে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আনোয়ারুল ইসলাম তার নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে বলেন, “এ ব্যাপারে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। লিয়েনে ছুটির জন্য আমি এখনও আবেদনও করিনি।”
Tags:
Bank News
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন