ইক্যুইটি মাইনাসে থাকা
বিনিয়োগকারীদের দায় মোচনের উদ্যোগ নিয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো। এক্ষেত্রে
ঋণের একটি বড় অংক ফেরত দিলে গ্রাহকদের ঋণের বাকি অংশ মওকুফ করে দেয়া হচ্ছে। পোর্টফোলিওর
ওপর ভিত্তি করে ঋণ মওকুফের বিষয়টি আমলে নেয়া হচ্ছে। এতে একদিকে মার্চেন্ট
ব্যাংকগুলো কিছুটা লোকসানের বিনিময়ে হলেও ঋণের অর্থ ফেরত পাচ্ছে। পাশাপাশি
বিনিয়োগকারীদের অ্যাকাউন্টগুলোও সচল হচ্ছে। বিনিয়োগকারী এবং প্রতিষ্ঠান উভয়ের সংকট মোচনেই এমন
উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে দাবি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর।
পুঁজিবাজারে স্মরণকালের ধসের পর
বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন। এর মধ্যে মার্জিন ঋণ নিয়ে
যারা বিনিয়োগ করেছিলেন তাদের অবস্থা বেশি খারাপ হয়। অনেকেই ধস এবং
দীর্ঘমন্দায় ফোর্স সেলের শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন। আবার অনেকে ঋণ গ্রহণকারী
প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। যে কারণে হাউজে যাতায়াত
বন্ধ করার পাশাপাশি শেয়ার ব্যবসা ছেড়ে দেন অনেক বিনিয়োগকারী।
অপরদিকে, বিনিয়োগকারীদের
লোন দিয়ে ৩ বছর ধরে লোকসান গুণছে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো। আর ঋণগ্রস্ত
অ্যাকাউন্টগুলো নিস্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। ঋণের কারণে ব্যক্তি শ্রেনীর বিনিয়োগকারী এবং প্রাতিষ্ঠানিক
বিনিয়োগকারী উভয়ই সংকটের মধ্যে রয়েছে।
এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে
বিনিয়োগকারীদের পুনরায় বাজারমুখী তথা লোকসান থেকে টেনে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে
বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক। ইতিমধ্যে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস এবং সোনালী ইনভেস্টমেন্টে এ
প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দু’টির ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মার্চেন্ট
ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মোহাম্মাদ এ হাফিজ বলেন, মার্চেন্ট
ব্যাংকগুলোতে এ ধরনে কাজ সব সময়ই হয়ে থাকে। যেসব বিনিয়োগকারী ক্রয় ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন
মার্চেন্ট ব্যাংক সব সময় তাদের পাশে থাকে। আর প্রায় সব মার্চেন্ট ব্যাংকই এ কাজ করে থাকে।
এদিকে এ ধরনের একটি উদ্যোগ
বাজারে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলেই মনে করেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। হাউজ কর্তৃপক্ষ
বিনিয়োগকারীদের অ্যাকাউন্ট নিয়ে লেনদেন করলে প্যানিক সেল কমে যাবে। এতে
বাজারে সেল প্রেসারও কমে যাবে। আর সেল প্রেসার কমে গেলে বাজার ঊর্র্ধ্বমুখী প্রবণতায় থাকবে। যা
বাজারের স্থায়ী স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
আর বাজার পরিস্থিতি উর্ধ্বমুখী
প্রবণতায় থাকলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর যে নিজস্ব বিনিয়োগ রয়েছে তাও লোকসান থেকে
বেরিয়ে লাভের মুখ দেখবে। মোট কথা মার্চেন্ট ব্যাংকের এ উদ্যোগে এখানকার বিনিয়োগকারী এবং
মার্চেন্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উভই উপকৃত হবে। যা বাজারে স্থায়ী স্থিতিশীলতার পথ প্রসারিত করবে
বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন