আর্টিফিশিয়াল বাজার কখনো টিকে না। বাজারকে টেকাতে হলে করপোরেট কালচার গড়ে তুলতে হবে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে করপোরেট গর্ভনেন্স গাইডলাইন পরিপালনের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। স্টেকহোল্ডারদের প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবে বাজার স্থিতিশীল থাকবে।
বৃহস্পতিবার বিদায়ী ভাষণে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রেসিডেন্ট রকিবুর রহমান। দুপুর ১টায় ডিএসই ভবনে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় ডিএসই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তিনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন।
রকিবুর রহমান বিদায়ী ভাষণে অতীতের ভুল ত্রুটির জন্য সংশ্লিষ্ট সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় বাজারে অনেক অঘটন ঘটেছে। তারপরও দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াইনি। সবার সঙ্গে কাজ করেছি। তারপরও যদি কোনো ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তবে আমি সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থী।
পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল রিপোটিং অ্যাক্ট প্রণয়নের ব্যাপারে রকিবুর রহমান বলেন, এটি হলে বাজারে অনেক ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কোম্পানিগুলো আর্থিক অনিয়ম অনেকাংশে দূর হবে।
বাজারের সমৃদ্ধির জন্য তিনি গ্রামীনফোনসহ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ২০ শতাংশ শেয়ার অফলোডের কথা বলেন। তার মতে, বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা বেশি। তাই এসব শেয়ার ছাড়া হলে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে।
রকিবুর রহমান ডিএসই’র পরবর্তী নেতৃবৃন্দের দিতে ইঙ্গিত করে বলেন, যিনি কাজ করেন তিনি সৎ হলে এবং সৎভাবে কাজ করলে বাজার স্বাভাবিক থাকবে। আমি সব সময় সঠিকভাবে বাজার পরিচালনার চেষ্টা করেছি।
বিএসইসি’র কাছে অনুরোধ জানিয়ে রকিবুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজার বিনিয়োগের জায়গা। এখানে বিনিয়োগ নিরাপত্তার জন্য বিএসইসি’র নজরদারি প্রয়োজন। প্রাথমিক গনপ্রস্তাব (আইপিও) থেকে শুরু করে করপোরেট গর্ভনেন্স গাইডলাইন পরিপালনে বিএসইসি সব সময় নজরদারি করলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তা বিধান হবে। এছাড়া পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার বিশেষ করে মার্চেন্ট ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো সঠিক দায়িত্ব পালন করছে কীনা তা বিএসইকে কঠোর নজরদারি করতে হবে। সরকারি শেয়ার আনার ব্যাপারেও বিএসইসিকে উদ্যোগ নিতে হবে বলে রকিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান।
ডিএসই’র ব্যাপারে তিনি বলেন, ডিএসই’র ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করতে হবে। যাতে অর্পিত দায়িত্ব তারা সঠিকভাবে পালন করতে পারে। এছাড়া সদস্যরা সঠিকভাবে কাজ করছে কীনা তা তদারকির ক্ষেত্রেও ডিএসইকে কঠোর হতে হবে।
বিনিয়োগকারীদের সম্পর্কে রকিবুর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীদের শেয়ারব্যবসা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকতে হবে।
জানা যায়, বিদায় উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার রূপসী বাংলা হোটেলে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার এবং সিপিডিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৭৬ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন রকিবুর রহমান। তিনি সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পাশাপাশি তার দায়িত্বকালীন সময়ের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। দায়িত্বকালীন ভুল ত্রুটির জন্য তিনি সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
রকিবুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজার ঠিক রাখতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সরকার এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকাই বেশি। তাই সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অর্থমন্ত্রণালয়কে পুঁজিবাজারের সমৃদ্ধির জন্য সমন্বয়ের সঙ্গে কাজ করতে হবে বলে রকিবুর রহমান জানান।
বিকেল তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনর ড. আতিউর রহমানের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাত করবেন বলে জানা গেছে।
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন