পুঁজিবাজারে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট (বিও) খুলতে গ্রাহকের ব্যাংক স্টেটমেন্টের ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে বিও খুলতে চেকের রাউটিং নম্বর (চেকের বামদিকে ব্যাংকের শাখার সঙ্গে যে নম্বর থাকে) বাধ্যতামূলক করায় ব্যাংক স্টেটমেন্ট অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, আগস্ট মাস থেকে বিও হিসাব খুলতে রাউটিং নম্বর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রাউটিং নম্বর ছাড়া সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) কোনো বিও হিসাব গ্রহণ করছে না।
আর গ্রাহকের ব্যাংক স্টেটমেন্টে রাউটিং নম্বর না থাকায় ব্রোকারেজ হাউজগুলো (যাদের ডিপি লাইসেন্স আছে) ব্যাংক স্টেটমেন্ট নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
এজন্য বর্তমানে কোনো গ্রাহক বিও হিসাব খুলতে আসলে গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবের রাউটিং নম্বরের জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্টের পরিবর্তে ব্রোকারেজ হাউজ কর্তৃপক্ষ চেকের ফটোকপি নিচ্ছেন। তবে কোনো কোনো ব্রোকারেজ হাউজ চেকের ফটোকপিও নিচ্ছেন না। শুধু নম্বরটি লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে।
সূত্র আরও জানায়, লেনদেনের সুবিধার্থে শিগগিরই শেয়ারবাজারে পেমেন্টের (শেয়ার বিক্রির পর গ্রাহক ব্রোকারেজ হাউজ থেকে টাকা উঠাতে চাইলে) ক্ষেত্রে চেকের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে রাউটিং নম্বর ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা হয়ে যাবে।
যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিএসইসি থেকে ব্যাংক স্টেটমেন্টের পরিবর্তে রাউটিং নম্বর নেওয়ার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে বিও হিসাব খোলার সময় গ্রাহকের কেওয়াইসি (নো ইওর ক্লায়েন্ট) ফরম পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে যে যে তথ্য লাগবে তা অবশ্যই ব্রোকারেজ হাউজকে সংগ্রহ করতে হবে।’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলানিউজকে বলেন, ‘গ্রাহক ডিপি হাউজের মাধ্যমে বিও হিসাব খুলে থাকে। এটি নিয়ন্ত্রণ করে সিডিবিএল। সুতরাং বিও হিসাব খুলতে কি লাগবে না লাগবে তা সিডিবিএলই নির্ধারণ করবে।’
সিডিবিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম এইচ সামাদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ বাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বিও হিসাব খুলতে গ্রাহকের রাউটিং নম্বর নেওয়া হচ্ছে। যা উন্নত বিশ্বে চালু আছে।’
ব্রোকারেজ হাউজ থেকে গ্রাহকের পেমেন্টের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকে অনলাইন চালু হলে রাউটিং নম্বর ব্যবহার করেই গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে টাকা পাঠানো যাবে। এক্ষেত্রে ব্রোকারেজ হাউজকে আর গ্রাহকের পেমেন্টের জন্য চেক ইস্যু করতে হবে না।’
উন্নত বিশ্বের এই প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে আমাদের দেশেও চালু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন