কারখানার কর্ম পরিবেশের উন্নতি না
হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার-সুবিধা (জিএসপি) বন্ধ রাখার
জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছে সুপারিশ করেছেন নয়জন সিনেটর।
ডেমোক্র্যাট দলের এই নয় সিনেটর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে
বলেন,“আমরা বলেছি, বাংলাদেশের
জিএসপি সুবিধা স্থগিত রাখা হোক এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং তাদের অধিকার রক্ষার
ক্ষেত্রে দৃশ্যমান উন্নতির জন্য সময় বেঁধে দিয়ে একটি রূপরেখা দেয়া হোক।”
এমন একটি সময়ে তারা এই সুপারিশ
করলেন, যখন বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধার ভাগ্য নির্ধারণের
বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র
বিষয়ক সিনেট কমিটিতে এরইমধ্যে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা নিয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর রবার্ট মেনেনদেয এই সুবিধা
বাতিলের জোরালো সুপারিশ করেছেন ওই শুনানিতে। চলতি মাসের শেষে এ বিষয়ে ওবামার সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে বলে ধারণা
করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের বেশ কিছু পণ্য
জিএসপির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পেলেও এর মধ্যে
তৈরি পোশাক নেই।
গ্লোকালওয়ার্কস ফাউন্ডেশনের
তথ্য অনুযায়ী এই সুবিধার আওতায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা গতবছর সাড়ে তিন কোটি ডলারের
পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করেছেন, যাতে তারা শুল্ক
ছাড় পেয়েছেন ২০ লাখ ডলারের মতো। আর ৪৯০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা
যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে শুল্প বাবদে দিয়েছেন ৭৩ কোটি ডলার।
এই হিসাবে জিএসপি বাতিল হলে
বাংলাদেশের অর্থনীতি হয়তো বড় ধরনের কোনো সঙ্কটে পড়বে না, তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষুণ্ন হবে বলে
বিশ্লেষকদের ধারণা।
৭ জুন সিনেট কমিটির শুনানিতে
সিনেটর রবার্ট মেনেনদেয বলেন, “এই সুবিধা
প্রত্যাহার করা হলে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের ক্ষুদ্র একটি অংশই হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত
হবে। তবে জিএসপি বাতিল করা হলে বাংলাদেশ একটি জোরালো সংকেত
পাবে যে, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক অধিকারের সুরক্ষা এবং কারখানার
নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।”
বাংলাদেশে শ্রমিক অধিকার
লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রেসিডেন্ট
বারাক ওবামার প্রশাসন গত জানুয়ারিতে জিএসপি সুবিধার বিষয়টি পর্যালোচনার উদ্যোগ নেয়। এ সুবিধার আওতায় বাংলাদেশের বেশ কিছু পণ্য
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পায়।
এ বিষয়ে শুনানির মধ্যেই গত ২৪ এপ্রিল
সাভারের রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩০ জনের মৃত্যু হয়, যাদের অধিকাংশই পোশাক শ্রমিক।
ভবন ধসের পর ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান
ডব্লিউ মজিনা বলেছিলেন, এ ঘটনা জিএসপির শুনানিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন