শেয়ারবাজারে বর্তমানে যেভাবে লেনদেন বাড়তে শুরু করেছে তাতে মূলত বড় পুঁজির ব্যক্তি ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশ গ্রহণই বেশি। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এখনো পুরোপুরি সক্রিয় হয়নি। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পুরোপুরি সক্রিয় হলে বাজার আরো গতি পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে বাজারে চরমভাবে লেনদেন খরা বয়ে গেছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখনো বাজার পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। ব্যাংকগুলোর সীমাবদ্ধতার জালে আটকে যাওয়া এবং অন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের তারল্য সংকটের অজুহাত বাজারকে আরো গতিশীল করতে পারছে না। তবে সব প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নিস্ক্রয় এমনটি নয়। সব ধরণের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাজারে সক্রিয় হলে দৈনিক লেনদেন আরো বাড়ত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অনেক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী জানান, শেয়ারবাজারে যারা লেনদেন করে তারা সরকারের কাছে কোনো অর্থ সাহায্য কিংবা করুনা চায় না। তারা চায় সরকার এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান এদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি এবং অবকাঠামো উন্নয়নের বৃহৎ স্বার্থে শেয়ারবাজারের জন্য কিছু ইতিবাচক পলিসি ঠিক করে দিলে এবং প্রয়োজনে কিছু ইনসেনটিভ ঘোষণা করলে এবাজারের চিত্র পরিবর্তন খুব বেশি দুরে নয়। বিষয়টি সরকারকে অনুভব করতে হবে। কারো স্বার্থে কিংবা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কিংবা সরকারের নেয়া প্রয়োজনীয় উদ্যোগে যাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সেদিকে সরকারকে সর্তক দৃষ্টি দিতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারি কোম্পানির শেয়ার অফলোড হলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ আরো বেড়ে যাবে।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা আরো জানান, বাজারের স্বার্থে সরকার শেয়ারবাজারে ৯০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন, বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগসহ বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা দিয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে সাইড লাইনে বসে থাকা বড় ব্যক্তি ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে শেয়ার ও লেনদেন ভলিউয়ম বাড়ছে। এতে অন্য বিনিয়োগকারীরাও আস্থা পেয়ে বাজারে ঢুকছে। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ব্যাংক, বীমা, মিউচ্যূয়াল ফান্ডসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সংগঠনগুলো সম্পূর্ণভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠেনি। এ অবস্থায় তাদের কেউ যাতে শুধু মুনাফার সন্ধানে বাজারকে নেতিবাচক দিকে ঠেলে না দিতে পারে সেদিকে সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে। এর ব্যর্তয় ঘটলে কারসাজিরা পুনরায় বড় ধরনের ফায়দা হাসিলের চক্রান্ত করবে।
এ বিষয়ে একাধিক অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষক শেয়ারনিউজ২৪ডটকমকে জানান, গত কয়েক দিনের লেনদেন চিত্র দেখে মনে হচ্ছে বড় ব্যক্তি ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সম্প্রতি সরকারের কিছু ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও বাজেটে প্রত্যাশানুযায়ী প্রতিফলন ঘটবে বলে আশা করছে। এ ধারাবাহিকতায় তাদের বিনিয়োগ অংশগ্রহণ বাড়ছে। এক্ষেত্রে যদি কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটে তবে সেটি হিতে বিপরীত হতে পারে।
বিশ্লেষকরা আরো জানান, সরকার ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে যেভাবে বিনিয়োগকারীদের আশান্বিত করা হচ্ছে তার ইতিবাচক বাস্তবায়ন সবারই প্রত্যাশা। তবে বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বাজারে এখনও সম্পূর্ণভাবে সক্রিয় অংশ গ্রহণ নিশ্চিত হয়নি। প্রাতিষ্ঠানিকরা তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে লেনদেনে ফিরে এলে বাজারের বিনিয়োগ গতি আরো বাড়বে বলে তারা মনে করছেন।
Comments[ 0 ]
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন